স্কুল ছাত্রদের যেভাবে প্রেষণা দেওয়া উচিত

মিলন শেখ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়


আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীদের আসলে বাস্তবমুখী তেমন কোন শিক্ষা দেওয়া হয় না। তবে ৯ম শ্রেণিতে ভর্তির সময় থেকেই তাদের বাস্তব জীবনের প্রতি উদ্বুদ্ধ করা হয়। তখন শিক্ষক বা পারিপার্শ্বিক অবস্থার মাধ্যমে কিংবা পরিবারের শিক্ষিত সদস্যের মাধ্যমে তারা এটুকু জানতে পারে যে কিভাবে পড়াশোনা করলে জীবনে ভালো কিছু করা যাবে। কারণ তারা ইতোমধ্যে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট(জেএসসি) পরীক্ষায় একটা ধাক্কা খেয়ে আসে।


শহর লেভেলের শিক্ষার্থীদের পরিবার সচেতন হওয়াতে তাদের ভবিষ্যৎ জীবন সম্পর্কে পরিবারের সদস্যরাই যত্নশীল হয়। এজন্য তারা কিছুক্ষেত্রে মোটামুটি ভালো করে। কিন্তু গ্রামীণ শিক্ষার্থীদের সিদ্ধান্তটা তাদের নিজেদেরকেই নিতে হয়। কিন্তু তখন তাদের মধ্যে অধিকাংশই শিক্ষাজীবন সম্পর্কে দূরদর্শিতার অভাবে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেনা।
কিছু শিক্ষক শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের সময় জিজ্ঞেস করে,কে কি হতে চাও? অনেকেই হাত তুলে বলে আমি ডাক্তার, আমি শিক্ষক, আমি ইঞ্জিনিয়ার, আমি পাইলট কেও বা বলে পুলিশ অফিসার হবে ইত্যাদি।কিন্তু সেই শিক্ষক হয়তো তাদের বক্তব্য শুনে এই পর্যন্তই বিষয়টা থামিয়ে রাখে। কখনো তাদের এই ইচ্ছাটার প্রসার ঘটায় না। এতে তাদের ইচ্ছাটা সময়ের সাথে পরিবর্তন হয়ে যায়। মাধ্যমিক লেভেল অর্থাৎ ৯ম-১০ম শ্রেণিতেই একটা শিক্ষার্থীর পুরো শিক্ষাজীবন নির্ভর করে।


কারণ, যে ডাক্তার/ইঞ্জিনিয়ার/বিজ্ঞানী/গণিতবীদ হতে চায় তার অবশ্যই বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে পড়া উচিত। যে নান্দনিক বিষয়ে জীবন গড়তে চায় বা সাহিত্যের প্রতি যার আগ্রহ কিংবা যে আর্টিস্ট/শিল্পী/নাট্যকার হতে চায় তার কলা বিভাগে ভর্তি হওয়া উচিৎ। আবার যে ব্যাবসায়িক বিষয়গুলো নিয়ে জীবন চিন্তা করে অর্থাৎ যে ছাত্রের ইচ্ছে- ভালো ব্যাংকার বা বিজনেসম্যান হওয়া, তার নিঃসন্দেহে কমার্স নিয়ে পড়া উচিৎ। কিন্তু এই বিষয়গুলো যদি তাকে কেও বুঝিয়ে না দেয় তবে সে তার ইচ্ছাটাকে এখানেই অজান্তে মেরে ফেলবে।
একজন শিক্ষক যদি ছাত্রদের ইচ্ছাগুলো বা স্বপ্নগুলো মন থেকে ইচ্ছে নিয়ে শুনে এবং তাদের স্বপ্ন পূরণ করতে কি করতে হবে,কোন পথে হাটতে হবে। কিভাবে উচ্চশিক্ষার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে,বিশ্ববিদ্যালয় /মেডিকেল কলেজ/কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়/পলিটেকনিক এগুলো কি? এবং কিভাবে এগুলোতে ভর্তি হতে হয়?এই প্রতিষ্ঠানগুলোতে পড়াশোনা করলে কি হয়? সে সম্পর্কে যদি শিক্ষা দেয়, গাইডলাইন দেয়,তাদের ল্যাকিংসগুলো পূর্ণ করার চেষ্টা করে এবং ভালোভাবে মোটিভেট করে তবেই মাধ্যমিক লেভেল থেকেই ছাত্ররা নিজের ভবিষ্যৎ ও বাস্তব জীবন নিয়ে চিন্তা করতে পারবে ও ভালো কিছু করবে।সঠিক গাইডলাইন একটা দূর্বল ছাত্রকেও সবল করে দেয় এবং সুন্দর ও সঠিক জীবন গড়তে সহায়তা করে।

One thought on “স্কুল ছাত্রদের যেভাবে প্রেষণা দেওয়া উচিত

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *