জীবনের লক্ষ্যমাত্রা নিশ্চিতের আগে

তাকবীর হোসাইন ‘জব অপারচুনিটিস ফর সিইউ স্টুডেন্টস ‘ গ্রুপে একটি লেখা শেয়ার করেছেন। স্ট্যাটাসটি নিচে তুলে ধরা হলো-


লাইফে ডিসিপ্লিন্ড ও সাকসেসফুল হতে আমরা সবাই চাই। সাক্সেসফুল হবার জন্য ক্যারিয়ার গোল (goal) ঠিক করার চেয়ে বেশি জরুরি লাইফের অনাকাঙ্ক্ষিত অভ্যেস পরিবর্তন করা। নেগেটিভ অভ্যেসগুলো খুব সহজেই অজান্তেই গড়ে উঠে। সেগুলো থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য উদ্যোগ আপনাকেই সচেতনভাবে নিতে হবে।


১. ট্রিগার চিহ্নিত করুন: কেন বার বার একি কাজ (অভ্যাস) হচ্ছে, সেটার অরিজিনাল ট্রিগার খুজে বের করুন। সকালে ঘুম থেকে উঠার অভ্যেস করতে চাইলে, সেটা না হবার কারন হলো দেরিতে ঘুমাতে যাওয়া। দেরিতে ঘুমানোর কারন চিহ্নিত করে সচেতনভাবে সেই কারন কে সমূলে উপড়ে ফেলুন


২. নিজের মানসিক স্থিরতা আনুন: নেগেটিভ অভ্যেসের কারন সমূলে উপড়ে ফেলুন বললেই উপড়ে ফেলা যায় না, কাজটা কঠিন। কিন্ত কাজটা সহজ হয় যদি নিজের উপর নিয়ন্ত্রন থাকে। নিজের উপর নিয়ন্ত্রন আনার উপায় হলো নিজেকে নিয়ে প্রতি সপ্তাহের নির্দিস্ট দিনে নিরিবিলি পরিবেশে ১০-১৫ মিনিট ভাবা। এই ভাবনার মধ্যে নিজের জীবন দর্শন, নিজের স্ট্রেংথ ও উইকনেস গুলো চিহ্নিত করা, লাইফের শর্ট টার্ম ও লং টার্ম লক্ষ্য, লক্ষ্যে পৌছানোর জন্য স্পস্ট কি কি কর্ম পদক্ষেপ প্রয়োজন ইত্যাদি নিয়ে ভাবা। এভাবেই আত্ন-পর্যালোচনার মাধ্যমে ধীরে ধীরে মানসিক স্থিরতা ও নিয়ন্ত্রন পাবেন। তখন যেকোন নেগেটিভ অভ্যাসের বৃত্তের বেড়াজাল ভাংগা সহজ হবে। মানসিক স্থিরতার জন্য নিজেকে কিছূটা সময় দিন নিরিবিলি ভাবে। ডিজিটাল সকল ডিভাইস থেকে ওই সময়টা দূরে থাকুন।


৩. Proactive হন: পৃথিবীতে হার্ড ওয়ার্কিং লোক দু ধরনের আছে- active এবং proactive. সমস্যা হলো, আগের দুনিয়া অনেক স্লো ছিল, তাই active হলেই যে কেউ তার লক্ষ্যে পৌছাতে পারতো এক দু দশক আগেও। এখন সব কিছু এতো ফাস্ট যে proactive না হলে যথাসময়ে সফলতা ধরা দেয় না।  Active আমরা সবাই জানি মানে কি, আর proactive মানে যারা আসল কাজের সময়ের পুর্বেই প্রস্ততি নিয়ে রাখে।


৪. রেগুলারিটি: যে কাজটাই ভাল করে করতে চান, সেটা অল্প মাত্রায় হলেও রেগুলার করুন। রেগুলারিটি আসল বিষয়, কতটুকু করলেন সেটা আসল নয়। ধরুন, দেশের বাইরে স্কলারশিপ নিয়ে পড়তে যেতে চান। সেক্ষেত্রে, অল্প অল্প করে সেই লক্ষ্যে পৌছানোর জন্য স্পেসিফিক কাজ গুলো যেমন- IELTS, GRE প্রস্তুতি, রিসার্চ সুপারভাইজর প্রফেসর খোজা, ভার্সিটি সিলেকশন লিস্ট ইত্যাদি নিয়মিত অল্প অল্প করে ধারনা ও প্রস্তুতি রাখা আন্ডারগ্রাডে থাকাকালীন proactive এর মতন কাজ। পাশ করার পরে super active হয়ে এক টানে সব কাজ ধরে শেষ করবো- এমন ভাবনা নিয়ে পড়ে থাকলে ওই সময় পদে পদে বাধা আসবে। 


৫. কমফোর্ট জোন থেকে বের হয়ে আসুন: নেগেটিভ অভ্যেসগুলো থেকে বের হওয়াটা কস্টের তার কারন মানুষ মাত্রই তার নিজস্ব সাজানো গোছানো আরামদায়ক মেন্টাল ও ফিজিক্যাল স্পেইসে আবদ্ধ থাকতে পছন্দ করে। এটাই তার কমফোর্ট জোন। পজিটিভ অভ্যাস গড়ার সময়ে দেখবেন সেই জোন থেকেই বের হচ্ছেন। নেগেটিভ অভ্যেস ভাংগার উপায় হলো কমফোর্ট জোন ভাংগা লাগবে।


নেগেটিভ অভ্যেসকে ভালো কোনো অভ্যেস দিয়ে রিপ্লেইস করতে হবে – একেবারেই রিপ্লেইসমেন্ট করতে গেলে হয়তো পারবেন না শুরুতে। তাই ধীরে ধীরে রিপ্লেইস করুন। যেমন: রাতে দেরিতে ঘুমানোর কারন যদি ফেসবুকে অনর্থক সময় কাটানো হয়, তাহলে রাতের একটা নির্দিস্ট সময়ের পরে ড্যাটা কানেকশন অফ করে, গল্পের বই পড়া শুরু করুন অথবা অন্য কোনো প্রডাক্টিভ কাজ যেটা নিয়মিত করা যাবে সেটা করুন। ছোট ছোট এই অভ্যেস গুলোই লাইফের লং টার্ম গোল গুলোকে একদিন সফলতার ছোয়া এনে দেবে। 


নিচের তিনটি নীতি মাথায় গেথে নিন:

1. Habit is more powerful than life dreams.2. Regularity is more important than quantity.3. Being proactive is wiser than being active.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *