কাদম্বরীদেবীর সুইসাইড নোট বই রিভিউ : রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

পরিচয় : কাদম্বরীদেবীর সুইসাইড নোট

বইয়ের নাম : কাদম্বরীদেবীর সুইসাইড-নোট : রবীন্দ্রনাথের নতুন বউঠানের শেষ চিঠি
লেখক : রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
বইয়ের ধরণ : উপন্যাস
প্রকাশনা : পত্র ভারতী (ভারত)
মুদ্রণ : ৬১তম মুদ্রণ, ২০১৬
পৃষ্ঠাসংখ্যা : ১২০ পৃষ্ঠা

কাদম্বরীদেবীর সুইসাইড নোট বইয়ের লেখক রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

Ronjon Bandopaddhay
       রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

কাদম্বরীদেবীর সুইসাইড-নোট : রবীন্দ্রনাথের নতুন বউঠানের শেষ চিঠি বইটি রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি অন্যতম অনন্য সৃষ্টি বলা যেতে পারে।
ঠাকুরবাড়ির অন্দরমহলের একটি প্রেমগাঁথা উঠে আসে এবং তিক্ত প্রণয়ের পরিণয় নিয়েই এ উপন্যাসের যাত্রা শুরু।

আজ থেকে ১৩৪ বছরের একটা সকাল অথবা বিকাল কেমন হতো? অন্ধকার থেকে আকাশ ফরসা হয়ে দুধের আকার ধারন করে সকাল অথবা আকাশের এক কোণ লজ্জায় লাল হয়ে বিকালের জানান দিত। এমন সময়ে নন্দন কাননে বসে সাহিত্যর রস চুইয়ে চুইয়ে কলমের ডগায় নিঃসরিত হয়ে খাতা ভরিয়ে ফেলতেন রবীঠাকুর । কাহিনীটা হয়তো এমনটা হতে পারত। কিন্তু না, মূল চরিত্র টি রবীঠাকুর নয়, বরং তার বউ ঠাকুরান কাদম্বরী কে নিয়ে। বিষ খেয়ে ২ দিন মৃত্যুর সাথে লড়াই করার পরেও কত যতন করে তার প্রাণ প্রতিম রবীর জন্য চিঠি লিখে গেছেন ।

কাদম্বরীদেবী ও রবীন্দ্রনাথের প্রেম নিয়ে লেখা

প্রসঙ্গত, ঠাকুরবাড়ির অন্দরমহলের কাদম্বরীর আত্মহত্যা নিয়ে লেখালিখি শুরু হয়েছিল বহুকাল আগে থেকেই। ১৯০০ সালের দিকে সোফিয়া পত্রিকায় ‘দ্য ওয়ার্ল্ড পোয়েট অফ বেঙ্গল’ প্রবন্ধে ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায় কবির সঙ্গে বউঠানের সম্পর্কের ইঙ্গিত দিয়ে লিখেছিলেন, রবীন্দ্র-কবিতায় যে ‘স্পিরিট’ তার উৎসে রয়েছে ‘an excruciating pain of an unrequited love’। তবে, জগদীশ ভট্টাচার্যই বিস্তৃত ভাবে প্রথম ‘শনিবারের চিঠি’-তে ধারাবাহিক ভাবে লেখেন। কাদম্বরীদেবীকে নিয়ে যাঁরা জগদীশ ভট্টাচার্যের ‘কবিমানসী’ বা, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘প্রথম আলো’ বা মল্লিকা সেনগুপ্তের ‘কবির বউঠান’, অথবা রবীন্দ্র-জীবনীকার প্রভাত মুখোপাধ্যায়, রবিজীবনী’-র অথর প্রশান্তকুমার পাল, রবীন্দ্র গবেষক জ্যোতির্ময় ঘোষ, অমিত্রসূদন ভট্টাচার্য পড়েছেন, তারা হুট করে এটা পড়ে শকড হবেন না।

Kadombari debi
      কাদম্বরী দেবী

কাদম্বরীদেবীর প্রেম ও সংশয়

সুইসাইড নোট ও এত সুন্দর হতে পারে? রবীঠাকুর এর প্রতি তার অভিমান ও ঝড়েছে সামান্য, বলেছেন মন চাইলে চিঠি টা পড়ো অথবা আগুনে দগ্ধ চিতার সাথে মিশিয়ে দিও,কাঠের সাথে আমার কথাগুলোও ছাই হয়ে যাক। ঠাকুর বাড়িতে নিজের পিতার সম্মান না পাওয়া টাকে ও খুব যত্ন করে লেখে গেছেন ।

বলেছেন,আমার বাবা যে এ বাড়ির বেয়াই তার প্রতি কারো নজর ও নেই। চাকরদের মত বাবা কে খাটানো হত। আমি কখনোই বাবার সামনে পড়তে চাইতাম না। কাদম্বরী দেবীর মৃত্যু নিয়ে ও কম জল ঘোলা হয়নি, হয়তো টাকা দিয়ে ডাক্তার দের মুখে কুলুপ এঁটে দেয়া হয়েছিলো, লোপাট করা হয়েছিলো প্রমাণ। আজ ১৩৪ বছর পরও তার সঠিক সত্য টা মেলেনি।

কাদম্বরীদেবীর সুইসাইড নোট বইয়ের লেখকের স্বার্থকতা

কাদম্বরীদেবীর সুইসাইড-নোট রবীন্দ্রনাথের নতুন বউঠানের শেষ চিঠি বইয়ে লেখক রঞ্জন বন্দোপাধ্যায়ের স্বার্থকতা আপনার থট প্রসেসে হানা দেয়াটাই।
প্রশ্ন জাগে, কাদম্বরী দেবীকে কি বাঁচানো যেতো না?
রবীঠাকুর কি নিরুপায় ছিলেন? কাদম্বরীর মৃত্যুর পিছনে কি কেউ প্রভাবক ছিলো? উপন্যাসটি যখন শেষ করবেন, ভেতর থেকে একটা কষ্ট উঠবে রবিঠাকুরের বউঠানের জন্য। আর এখানেই স্বার্থকতা অর্জন করে নেন লেখক।

তানিম মুশফিক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *