ওঙ্কার বই রিভিউ – আহমেদ ছফার ওঙ্কার

পরিচয় : ওঙ্কার

বইয়ের নাম : ওঙ্কার
লেখক : আহমদ ছফা
বইয়ের ধরণ : মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক উপন্যাস
প্রকাশনা : স্টুডেন্ট ওয়েচজ
পৃষ্ঠা : ৪৯
মুদ্রিত মূল্য : ১৫০ টাকা

ওঙ্কার বইয়ের লেখক আহমেদ ছফা

ahmed sofa
আহমেদ ছফা

ওঙ্কার বইয়ের লেখক আহমেদ ছফা একজন বাংলাদেশি ঔপন্যাসিক, কবিরও লেখক ও একজন গণবুদ্ধিজীবী ছিলেন। আব্দুর রাজ্জাক, সলিমুল্লাহ খানসহ অনেকেরই মতে, মীর মশাররফ হোসেন ও কাজী নজরুল ইসলামের পরে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাঙালি মুসলমান লেখক হলেন আহমদ ছফা। তিনি তার লেখায় বাংলাদেশি জাতিসত্তার পরিচয় নির্ধারণকেই প্রাধান্য দিতেন।
আহমদ ছফা ১৯৪৩ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ শে জুন চট্টগ্রামের চন্দনাইশে জন্মগ্রহণ করেন। আহমেদ ছফা তার ব্যক্তিগত জীবনে প্রায় ত্রিশটির অধিক গ্রন্থ রচনা করেছেন। ওঙ্কার আহমেদ ছফার লেখা দ্বিতীয় উপন্যাস। আহমেদ ছফা ২০০১ খ্রিষ্টাব্দের আটাশে জুলাই অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে নেবার পথে মৃত্যুবরণ করেন।

ওঙ্কার উপন্যাস বইয়ের রিভিউ

আমার পড়া আহমদ ছফার তৃতীয় বই ওঙ্কার।
আহমেদ ছফা ১৯৭৫ সালে বইটি লেখেন। বইটি মূলত ঊনসত্তরের গনঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে লেখা। গল্পের শুরুতে উল্লেখযোগ্য চরিত্র নায়কের বাবা, যিনি কিনা ব্রিটিশ শাসনামলে তালুকদার ছিলেন। যদিও তার বিষয় আশয় তলানিতে ঠেকেছে তবুও তিনি তার সন্মানজনক অতীত থেকে বেড়িয়ে আসতে পারেননি। তার নিত্য নৈমিত্ত্যের কাজ গ্রামের মানুষের সাথে মামলা মোকদ্দমা করা। কিন্তু কৌশলে হেরে তিনি জমিজমা মোক্তারের নিকট খোয়ান। এর মধ্যে উঠে যায় জমিদারি প্রথা। তিনি মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন এবং অসুস্থ হয়ে পড়েন। যার সুযোগ নিয়ে মোক্তার তার বোবা মেয়েকে তালুকদারের একমাত্র ছেলের সাথে বিয়ে দেয় এবং সম্পত্তি ফিরিয়ে দেয়।

দিনের আবর্তনে বউয়ের সাথে সংসার করলেও তার অফিসের কেরানি বিয়ে করার পর বউকে না নিয়ে করা নানা গল্প তার মনে হীনমন্যতা তৈরি হয়। আবার, নায়ক অফিসের কাজে সকাল বিকাল ব্যস্ত, তাই বোনকে সময় দিতে পারে না। বোনও বোবা ভাবির সাথে কথা বলতে পারে না। তাই বোনের সময় কাটানোর জন্য গান শেখানোর ব্যাবস্থা করে। একদিন নায়ক লক্ষ করলো তার বউ বোনের গানের হারমোনিয়াম নিয়ে গাওয়ার চেষ্টা করছে কিন্তু তার গলা দিয়ে আসছে অন্য রকম সুর। এর মধ্যে বউয়ের সাথে তার ভাব হতে শুরু করে। এর মধ্যে গণঅভ্যুত্থান শুরু হলে আন্দোলন শুরু হয়। কিন্তু নায়ক আন্দোননে গা ভাষায় নি কারণ তার শ্বশুর মুসলিমলীগ করে। শ্বশুরের সাথে তার স্বার্থ জড়িত। একদিন মিছিল আসলে নায়ক লক্ষ করে তার বউও স্লোগান দেয়ার চেষ্টা করে। একদিন তার গলা দিয়ে রক্ত চলে আসে। এতে নায়ক চিন্তা করে তার বউ না শহীদ আসাদ কার রক্ত বেশি লাল।

এই গল্পে একটি বিষয় আমার ভালো লেগেছে যেটি পিতার ভালোবাসা তার কন্যার প্রতি। আর খারাপ লেগেছে মানুষের দূর্বল জায়গায় আঘাত করা এবং মানুষকে খোঁচা দিয়ে গল্প করা।
ভালে লাগলে বইটি পড়ে দেখবেন।

মোঃ তাইব পাঠান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *