১৪ মাস ঝুলে আছে এক কোর্সের পরীক্ষা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৪-১৫ সেশনের শিক্ষার্থীরা মাস্টার্স চূড়ান্ত পরীক্ষা শুরু হয়েছিল গেল বছর মার্চে। তিনটি কোর্সের পরীক্ষা বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়।

শেষ পরীক্ষাটি ছিল ১৮ মার্চ। কিন্তু ৮ মার্চ দেশে প্রথমবারের মতো করোনারোগী শনাক্ত হওয়ার পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণার দাবি ওঠে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণার জন্য অনশনেও বসেন একদল শিক্ষার্থী। পরবর্তীসময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেট ১৮ মার্চ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস ও আবাসিক হল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। ফলে আটকে যায় নির্ধারিত এ পরীক্ষা। এরপর দফায় দফায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণায় দীর্ঘ ১৪ মাস মাস্টার্স সম্পন্ন করা ঝুলে আছে প্রায় দুইশ শিক্ষার্থীর।

শিক্ষার্থীরা জানায়, গত বছর বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার মধ্যে ডিন ও চেয়ারম্যান এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে পরীক্ষাটা নিয়ে নেওয়ার জন্য আবেদন করে। কিন্তু সেটি নাকচ করা হয়। ফলে লকডাউন বাড়তে বাড়তে এবছর জানুয়ারিতে নেওয়ার তারিখ ঘোষণা করা হয়। সেটাও স্থগিত করা হয়। এরপর ২৪ ফেব্রুয়ারি নেওয়ার কথা ছিল। সেটা স্থগিত করে ২০ মার্চ পরীক্ষা নেওয়ার জন্য নতুন রুটিন দেওয়া হয়। সেটিও স্থগিত হয়।

শিক্ষার্থীদের দাবি, হল খোলা, করোনার টিকা গ্রহণ এরকম ইস্যু তৈরি করে পরীক্ষাটা হয়নি। এরপর একাডেমিক কাউন্সিল স্বশরীরে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় আটকে যায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের মাস্টার্স সেকেন্ড সেমিস্টারের শেষ পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল ২০২০ সালের মার্চের ১৮ তারিখ। করোনা পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আকস্মিকভাবে আমাদের পরীক্ষাটা আটকে যায়। এই একটি পরীক্ষার জন্য আমরা অনেক জবে আবেদন করার প্রাথমিক যোগ্যতা অর্জন করতে পারিনি। ফলে আমরা একটি কোর্সের জন্য সেশনজটে পড়ে গেলাম।

আরেক শিক্ষার্থী বলেন, পরীক্ষাটা আটকে যাওয়ায় আমাদের মানসিক ক্ষতি হয়েছে। ছেলেরা আর্থিক কষ্টে আছে। মেযেদের ক্ষেত্রে অনেককে বিয়েতে বসতে হয়েছে। পারিবারিক অশান্তিতে অনেকে আত্মহত্যাপ্রবণ হয়ে উঠেছিল। আমরা চাই যেকোনো মাধ্যমে পরীক্ষাটা হয়ে যাক। শিক্ষাজীবন দ্রুত শেষ হোক।

শিক্ষার্থীরা বলেন, বারবার তারিখ ঘোষণার ফলে প্রস্তুতিও নিতে হচ্ছে। কিন্তু পরীক্ষাটা হচ্ছে না। ফলে এক ধরনের প্রস্তুতি নেওয়ার অভিপ্রায়টা কমে যায়।

এ বিষয়ে জানতে বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক রাশেদা ইরশাদ নাসিরকে কল দেওয়া হলেও কলটি রিসিভ হয়নি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য শিক্ষা অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল বলেন, আমি বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত আছি। ডিন্স কমিটির সভায়ও বিষয়টি নিয়ে কথা হয়েছে। এরকম যেসব বিভাগে একটি বা দু’টি পরীক্ষা বাকি আছে, আমরা সেসব পরীক্ষা সহসা নিয়ে নেবো

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *